মোঃ সাইফুল ইসলাম, জেলা প্রতিনিধি, মাদারীপুরঃ
তিন বছর পূর্বে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় মিলন ও সুমি দম্পতির। বিয়ের পর তাদের সংসারে জন্ম নেয় এক পুত্র সন্তান। বিয়ের কয়েকমাস পর থেকেই তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ সৃষ্টি হয়।
একপর্যায়ে তাদের মধ্যে সম্পর্কের চরম অবনতি হয়। পরবর্তীতে সুমি আক্তার বাদি হয়ে মাদারীপুর আদালতে স্বামী মিলন সরদারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এসময় মিলন ক্ষিপ্ত হয়ে সুমিকে তালাক দেয়। ঘটনাটি ঘটে মাদারীপুর সদর উপজেলার ঘটমাঝি ইউনিয়নের খাগদী গ্রামে। মিলন ওই এলাকার কুদ্দুস সরদারের ছেলে ও সুমি আক্তার কেন্দুয়া ইউনিয়নের ঘটকচর গ্রামের শওকত আলীর মেয়ে।
জানা যায়, সুমির দায়ের করা মামলাটি সাক্ষীর জন্য দিন ধার্য ছিল সোমবার (৩১ অক্টোবর)। ঐ দিন আসামী মিলন ও মামলার বাদি সুমি এবং তাদের একমাত্র সন্তানসহ পরিবারের লোকজন আদালতে উপস্থিত ছিল। চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সাক্ষ্য গ্রহণকালে ছোট একটি শিশু এজলাসের ভিতরে দৌড়া দৌড়ি করতে ছিল। চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ছেলেটির পরিচয় জানতে চাইলে উভয়পক্ষ জানান যে, ঐ মামলার আসামি ও বাদির ছেলে। চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট উক্ত মামলার বাদি সুমি আক্তার এবং আসামি মিলন সরদারকে সন্তানটির দিকে বিবেচনা করে সংসার করার পরামর্শ প্রদান করেন। উক্ত পরামর্শ অনুযায়ী বাদি বিবাদী ও তাদের উভয়ের পরিবার আপোষ নিষ্পত্তির বিষয়ে আলাপ আলোচনা করে উভয় পক্ষের ভুল সংশোধন করে পুনরায় সংসার করবেন মর্মে আদালতকে অঙ্গিকারনামা প্রদান করেন।
উভয় পরিবারের সম্মতিতে পুনরায় মাদারীপুর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদ এর উদ্যোগে সোমবার রাতে পুনরায় নতুন কাবিনমূলে পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহরে মিলন ও সুমি পুনরায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। জেলা জজ আদালত প্রাঙ্গনে এই ব্যতিক্রমী বিয়ের আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন মাদারীপুরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. ইসমাইল হোসেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল এর বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মো. রফিকুল ইসলাম, চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদ, জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন, পুলিশ সুপার মো. মাসুদ আলম, পাবলিক প্রসিকিউটর মো. সিদ্দিকুর রহমান সিং, ঘটমাঝি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট বাবুল আকতারসহ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক, চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট, আইনজীবীসহ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।